‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার নিচ্ছেন নানা উদ্যোগ। কিন্তু এই বিদ্যুতের আলোর ছোঁয়া থেকে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যর বাধাগ্রস্থের স্বীকার হচ্ছেন একটি পরিবার।
কোন উপায়ান্তর না পেয়ে উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের দক্ষিণ যাত্রাপাশার মহল্লার মৃত আ: নুর মিয়ার পুত্র মো: আরজু মিয়া বাদি হয়ে দক্ষিণ যাত্রাপাশা মহল্লার মৃত বারিক উল্লাহ পুত্র মো: আলাউদ্দিন, মৃত ছবির মিয়ার পুত্র জাকির মিয়া, নুর ইসলাম মিয়ার পুত্র মো: শামীম মিয়া, হোসেন আহম্মদ মিয়ার পুত্র কয়েছ মিয়াকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর বরাবরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে আপত্তি প্রসঙ্গে একটি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রতিপক্ষের নিকট ওই পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে বাধাগ্রস্থের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করেন। এদের মধ্যে নুর ইসলাম মিয়ার পুত্র শামীম মিয়া উক্ত ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার। বিশেষ করে তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। গত মাসের ২৫ তারিখ উভয় দপ্তরে এই লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
লিখিত অভিযোগ ঘেটে জানা যায়,অভিযোগকারী মো: আরজু মিয়ার দক্ষিণ পাশের্^ খাল পাড়ে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। এই খুঁটি থেকে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দিতে বিবাদীগণ বাধা প্রদান করছেন।
তার প্রবাসী ছেলের নামে নতুন মিটার সংযোগের জন্য আবেদন করা হলে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করে বিগত জুন মাসের ১২ তারিখ বানিয়াচং পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের লোকজন সংযোগটি দেয়ার জন্য আসলে বিবাদীগণ পূর্ব বিরোধের জেরে তাদেরকে সংযোগ প্রদানে বিরত থাকতে বাধা দেন।
অথচ বর্ণিত খুঁটি থেকে আবেদনকারীর বাড়িতে সংযোগ দিতে বিন্দু পরিমানও বিবাদীদের জমিতে বিদ্যুতের তাঁর পরে নাই। অন্যদিকে আবেদনকারীর ঘরে অন্ত:সত্ত্বা একজন মহিলা, অসুস্থ্য রোগী এবং ছাত্রছাত্রী রয়েছে। গরমে তাদের পড়ালেখা করতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তাই উপরোক্ত বিষয়াদি বিবেচনা করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে এই আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী আরজু মিয়া।
এই বিষয়ে আরজু মিয়া জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের জন্য বানিয়াচং পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ আমাকে ওয়্যারিং করার অনুমতি দেয়। অনুমতি পেয়ে এই পরিবার যথারীতি ওয়্যারিং করি। পরবর্তীতে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান নতুন সংযোগ দিতে গেলে মেম্বার শামীম মিয়া গংরা বাধা প্রদান করেন। পরে লাইনম্যান সংযোগ না দিয়েই চলে যায়।
বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ায় আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্ধকারে আছি। পাশের ঘরে বিদ্যুতের আলো দেখা যায় কিন্তু আমার ঘরে বিদ্যুতের আলো নেই। কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী বিষয়টি আমলে নিয়ে অতি শীঘ্রই যেন আমার পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।
অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার শামীম মিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার রিং করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে না কেন ,অবশ্যই সংযোগ পাবে। তবে ভুক্তভোগী যদি মানুষের কাছে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলে তাহলে তো কেমন লাগে বলেন। এটা চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে গেছে। একপক্ষ বলছে যেভাবেই হোক বিদ্যুৎ নিবে আবার অপর পক্ষ বলছে কোনভাবেই সংযোগ নিতে দেয়া হবে না।
তারপর ভুক্তভোগী আমার কাছে আসেনা। আমার কাছে আসলে তো একটা বিহিত করা যেত। এখানে আমার কোন লাভ-ক্ষতি নাই। ইউএনও মহোদয় আমাকে বিষয়টা জানিয়েছেন। মানবিক দিক চিন্তা করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়াটা যৌক্তিক।
পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান, বিষয়টা খুবই দু:খজনক। এ নিয়ে এলাকার কিছু লোকের সাথে আবেদনকারী আরজু মিয়ার বিরোধ রয়েছে। আমাদের লাইনম্যান কয়েকবার লাইন দিতে গেলেও তাদের বাধার কারণে দিতে পারেনি। সুষ্টু সমাধানের ভিত্তিতে আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই সংযোগ দিতে পারবো।
বিস্তারিত জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে জানিয়েছেন, কারো সাথে কোন বিরোধ থাকলে বিদ্যুৎ পাবেনা কেন ? এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। বিষয়টা নিয়ে উভয়পক্ষকে বসে সমাধান করে দিয়েছি। আর ইউপি মেম্বার শামীম মিয়াকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যেন সে কোন বাধা প্রদান না করে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই ভুক্তভোগী আরজু মিয়া বিদ্যুৎ পাবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply