একজন নম্র, ভদ্র, আদর্শবাদী শিক্ষক ও মানবতাবাদী মানুষ ছিলেন শরীফ উদ্দিন আহমেদ। সর্বোপরি তিনি একজন সংগঠক, সংসদ সদস্য, সমাজ সংস্কারক ও পরদু:খে কাতর আত্নমর্যাদা সম্পন্ন একজন মানুষ।
সৎ জীবনযাপন ও আদর্শীক রাজনীতির জন্য আজও তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে অণুকরণীয় হয়ে আছেন।
তার সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এলআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র বলেন-‘‘একবার তিনি আমাদের অষ্টম শ্রেণি ক্লাসে গেলেন,তখন তিনি সবে মাত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বললেন,তোমাদের কার কার দুইটি করে ফুলপ্যান্ট আছে দাঁড়াও,তখন মাত্র ১৭/১৮জন দাঁড়ালো। আবার বললেন,কার কার তিনটি ফুলপ্যান্ট আছে ,তখন মাত্র ৬/৭ দাঁড়ালো।
তখন তিনি বললেন,শোনো তোমাদের বলি,আমি যখন ক্লাস এইট থেকে টেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি,তখন আমার একটি মাত্র ফুলপ্যান্ট ছিল। ছাত্র জীবনের একটি ফুল প্যান্ট এর অধিকারী হয়ে আজ আমি এমপি নির্বাচিত হয়েছি।
তোমাদের প্রত্যেকের ই একের অধিক ফুলপ্যান্ট আছে।
তোমরা আমার চেয়ে প্রত্যোকই ভালো অবস্থানে যাওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। তিনি আরো শিক্ষামূলক আরও উপদেশ দিয়ে ক্লাস শেষ করলেন।
আগামী রবিবার ( ৬ আগস্ট) সেই মহান ব্যক্তির ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে আসকর উল্লাহ জামে মসজিদে বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে কোরআন খতম,বাদ জুম্মা মিলাদ মাহফিল,তবারক বিতরণ ও মরহুমের কবর জিয়ারত।
তার পরিবারের পক্ষ থেকেও আয়োজন করা হবে দোয়াও মিলাদ মাহফিলের। কিন্তু ওই দিন জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ সভা থাকায় ৬ আগস্টের পরিবর্তে আগামী ১১ আগস্ট রোজ শুক্রবার এসব কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য ,মরহুম শরীফ উদ্দিন আহমেদ ১৯৯৬ সালের ৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। সৎ জীবনযাপন ও আদর্শিক রাজনীতির জন্য আজও তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টামত্ম হয়ে আছেন। মরহুম শরীফ উদ্দিন আহমেদ বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামে ১৯৪২ সালে ৭ই মার্চ জন্মগ্রহন করেন।
তার পিতার নাম মরহুম দিদার বক্স। শরীফ উদ্দিন আহমেদ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক এবং বানিয়াচং এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এ্যান্ড রিসার্স থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
পরে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭১সালে সম্মানের সহিত এলএলবি পাশ করেন। এলএলবি পাশ করার পূর্বে তিনি বানিয়াচংয়ের ঐতিহাসিক এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েক বছর সুনামের সাথে শিক্ষকতা করে ছাত্রদের পরম আত্নার আত্নীয় হয়ে উঠেছিলেন।
পরে হবিগঞ্জ কোর্টে আইন ব্যবসা করে সাফল্য বয়ে আনেন। আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতি ও মানুষের সেবাকে কর্ম হিসেবে গ্রহন করেছিলেন। জাতীয় সংসদ চলাকালে ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট আকস্মিক ভাবে মুত্যৃবরণ করেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply