1. sm.khakon@gmail.com : admin :
  2. rayhansumon2019@gmail.com : rayhan sumon : rayhan sumon
রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন

ঘুষ-নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রধান শিক্ষক ভানু’র বিরুদ্ধে

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে

বানিয়াচং উপজেলা সদরের মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যে ঘুষ চাওয়া অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ ও নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন বানিয়াচং ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মো: মনসুর আলীর পুত্র খায়রুল আলম রাজু। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক,স্থানীয় সেনা ক্যাম্প ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

অভিযোগ ঘেটে জানা যায়, গত বছর নভেম্বরের ১৯ তারিখ স্থানীয় একটি পত্রিকায় বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫টি শূন্যপদে একটি বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন অভিযোগকারী খায়রুল আলম রাজু। সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ৭০০টাকার পোস্টাল অর্ডারসহ আবেদন জমা তিনি। যা ছিল অফেরতযোগ্য। কিছুদিন পরে দুইবার পরীক্ষার তারিখ হয়েও পরীক্ষা বাতিল করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে আবার নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তখন আগে আবেদনকারীরা আবেদন করার প্রয়োজন নেই কথাটি উল্লেখ ছিল।

আর অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি পদে উল্লেখ ছিল (উভয় বার) আবেদনকারীকে অবশ্যই ব্যবসা শিক্ষা শাখার ছাত্র হতে হবে। পরবর্তীতে তৃতীয় বার পরীক্ষার তারিখ ঠিক হলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছরে ১২ই জুলাই রোজ শুক্রবার। সকাল দশটার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রশ্ন পত্রে জামেলা থাকার কারণে পরীক্ষা শুরু হয় বারোটার অনেক পরে। পরীক্ষার আগে অফিস থেকে ডাকযোগে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। প্রতিবারই প্রবেশপত্রে আবেদনকারীর নাম আসে ভুল। তথ্যটি অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ স্যারকে অবগত করেন রাজূ।

প্রধান শিক্ষক বলেন সমস্যা নেই আপনার কাগজপত্রে পুরো নাম আছে। এতে সমস্যা হবে না বা হওয়ার কথাও নয়। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর সপ্তাহ দিন আগে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ অভিযোগকারী রাজুকে ফোন দিয়ে বলেন, আপনার চাকুরীটা কী খুব দরকার। তখন রাজু বললো জি স্যার ভীষন দরকার। তারপর প্রধান শিক্ষক ভানু বললেন, ঠিক আছে আমার সাথে বাজারে দেখা করিও। সব কথা ফোনে বলা যায় না। গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয়। তারপর বিকেলে স্থানীয় বড়বাজারের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষক ভানুর সাথে দেখা হয় অভিযোগকারী রাজুর। একপর্যায়ে রাজুকে প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ বললেন, চাকরি হলে আমাকে কি খাওয়াবে। তখন রাজু হেসে উত্তর দিল স্যার আপনাকে ৫ কেটি মিষ্টি খাওয়াবো।

পরবর্তীতে রাজুকে কাছে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ভানু বললেন এই মিষ্টি কিন্তু টাকার অংক। সত্যি সত্যি মিষ্টি নাহ। তারপর পরীক্ষার দিন অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি পদে ৭/৮জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৩ জন লিখিত পরীক্ষায় পাস করে এদের মধ্যে রাজুও একজন। এরপর চলে লোক দেখানো ভাইভা ও প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা। পরীক্ষার ফলাফল যখন প্রকাশ করা হবে তখন কে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে আগেই এটা প্রকাশ পেয়ে যায়। সেখানে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে একজন উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতিকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখানো হয়। অভিযোগের আরো উল্লেখ করা হয়-দলীয় ও ক্ষমতার বলে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ। তাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এই লিখিত আবেদন করেছেন খায়রুল আলম রাজু।

এদিকে প্রধান শিক্ষক ভানুর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠায় অনেকটা গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। এই অভিযোগ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের নামাজ পড়ার কক্ষকে বক্সিং প্র্যাক্টিস রুম হিসেবে স্থানীয় বক্সিং একাডেমিকে বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। এই বিষয়টা নিয়ে উপজেলাজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে।

অন্যদিকে গতকাল রবিবার তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি। তার শ্বাশুড়ি অসুস্থ্য থাকায় নাকি দেখতে গিয়েছেন জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। তবে কোন ছুটি নিয়েছেন কিনা সেটা ওই শিক্ষক নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি। অন্যদিকে অপর একটি সুত্র জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ এসব অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিশৃঙ্খলা এবং কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টি হওয়ার আগেই প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অচিরেই পদত্যাগ করবেন। বিস্তারিত জানতে প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সাংবাদিক পরিচয়ে ক্ষুদে বার্তা দিলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিস্তারিত জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: মাহবুবুর রহমান জানান,অভিযোগ পেয়েছি। প্রপার ওয়ে’তে আমরা আগানোর চেষ্টা করছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়ম, বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র আনতে হাজার টাকা দাবি, মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ, নিয়োগ বাণিজ্যে দূর্নীতি, ছাত্রীদের সাথে অসদাচরণ, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব তছরুপ করাসহ নানা অভিযোগে জাতীয়সহ স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।

 

 

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
বানিয়াচং মিরর  © ২০২৩, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD