বানিয়াচং উপজেলা সদরের মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র বিরুদ্ধে নানা অনিয়মসহ দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতো অভিযোগ উঠার পরও তিনি কি করে দায়িত্বে থাকছেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন উপজেলাবাসী। অনেকেই জানতে চেয়েছেন তার খুঁটির জোর কোথায়।
তার নানা অনিয়ম নিয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া হাম্মাদ হাবিব নামে এক ছাত্র তার নিজস্ব আইডিতে তোলে ধরেছেন। নিম্নে তার করা পোস্টটি হুবহু তোলে ধরা হল-হাম্মাদ হাবিব লিখেন, প্রসঙ্গ যখন মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ চন্দ তখন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমিও কিছু শেয়ার করতে চাই। প্রথমত আমি মানসিক ভাবে মারাত্মক আঘাত পেয়েছি যখন শুনেছি উনি বিদ্যালয়ের নামাজ ঘরে কিছু নারীদেরকে বক্সিং প্র্যাক্টিসের জন্য চাবি দিয়েছেন। তারা নামাজ ঘরে বালু ভর্তি বস্তা ঝুঁলিয়ে হাফ প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় প্র্যাক্টিস করেছে।
এখন উনার কিছু বৈশিষ্ট্য বলি যা আমি ছাত্র থাকা কালীন সময়ে দেখেছি। ১.ছাত্রীরা বোরকা বা হিজাব পরে আসলে উনি তাদেরকে নানা ভাবে অপমান করতেন। জেনারেল ড্রেসের সাথে তুলনা করে বলতেন বোরকা পরে তাদেরকে কেমন খ্যাত লাগছে। আমার জানা মতে অসংখ্য শিক্ষার্থী হিজাব বোরকার কারনে উনার থেকে অপমান -ভর্ৎসনার শিকার হয়েছে।
২. ছাত্রীদেরকে জোরপূর্বক স্কাউটে যুক্ত করতেন। মানে জাতীয় দিবস গুলোতে যে কুচকাওয়াজ ও প্রদর্শনী হয় সেগুলোতে। বিশাল দর্শকমন্ডলির মাঝে শারিরীক বিভিন্ন প্রদর্শনী করতে হয় বলে মেয়েরা স্বাভাবিকতই লজ্জা পাইতো, এটা তাদের পারিবারিক শিক্ষার বিপরীত,তাই তারা যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানাইতো। কিন্তু উনি তাদেরকে লজ্জা দিয়ে, ধমকি ধামকি দিয়ে বাধ্য করতেন।
৩. নিয়মিত নামাজ পড়তো বলে আমাদের এক সিনিয়র ভাইকে উনি জঙি ট্যাগ দিয়েছিলেন। ৪.বোর্ড পরীক্ষা গুলোতে এ প্লাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের একে অন্যের লেখা দেখে দেখে লেখার ট্রেনিং দিতেন, আমার ব্যাচের এরকম ট্রেনিং হয়েছিলো সমাপনী পরীক্ষার সময়।
৫.উনার মধ্যে লুক্কায়িত ইসলাম বিদ্বেষ আছে, নানা সময় উনি আমাদেরকে ম্যানুপুলেট করতেন। আমি জেএসসি তে এ+ পাওয়ার খবর স্থানীয় পত্রিকায় ছেপেছিলাম (আনাদেরকে খবর ছাপার জন্য উনিই জোড়াজুড়ি করছিলেন)। তখন কেন পাঞ্জাবি পরিহিত ছবি দিলাম, এজন্য উনি আমাকে বকাঝকা করেছিলেন।
৬.শিক্ষকদের হেনস্তা করা বলা যায় উনার নিয়মিত অভ্যাস। অদ্য উনার ব্যাপারে অর্থনৈতিক দূর্নীতি নিয়ে কথা উঠছে, কিন্তু আমি মনে করি এটার থেকে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বেশী ভয়ের। পরিশেষে বলি, আমি সকল শিক্ষককে ভালোবাসি, সকল শিক্ষকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তেমনি উনার সাথেও আমার সম্পর্ক সুন্দর আছে। কিন্তু এগুলোর দোহাই দিয়ে আমার কাছে থাকা সত্য চাপা দিয়ে রাখতে পারি না।
আর উনি যেহেতু নেতৃত্বের স্থানে আছেন সেহেতু ব্যাপারটাকে আরো সিরিয়াসলি নিতে হবে। আর আমি এটাও চাই না উনার সাথে কোনো রকম বেয়াদবি মূলক আচরণ হোক, সেনাবাহিনী, এলাকার মুরুব্বি ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধান হোক। অভিযোগ গুলোর বিষয়ে সত্যতা জানতে মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ’র বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়ম, বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র আনতে হাজার টাকা দাবি,মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ, নিয়োগ বাণিজ্যে দূর্নীতি, ছাত্রীদের সাথে অসদাচরণ, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব তছরুপ করাসহ নানা অভিযোগে জাতীয়সহ স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply