বানিয়াচং-হবিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের খান বাহাদুর এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে পানির ওপর ভাসমান শাকসবজি চাষ করা হচ্ছে। এতে কৃষকেরা বেশ সফল। তারা সবজি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছেন। উপজেলঅ কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহায়তায় প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় কৃষক পর্যায়ে ভাসমান শয্যা পাতা হচ্ছে।
যেসব অঞ্চল পানির নিচে থাকে, সেখানে কৃষকদের ভাসমান সবজি চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মূলত কচুরিপানা দিয়ে শয্যা (বেড) তৈরি করা হয়। প্রতিটি শয্যা ২০ মিটার লম্বা, প্রায় দেড় মিটার পুরু ও প্রস্থ চার মিটার। তিনটি বেড মিলে একটি প্রকল্প। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে মোট ২৫টি প্রকল্পে শাকসবজির আবাদ চলছে। কৃষকেরা প্রধানত লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, কলমি লতা, ঢেড়স, শিম, লতিরাজ কচু ও লাউয়ের চাষ করছেন। প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা।
কৃষি কর্মকর্তারা চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিচ্ছেন চাষিদের। সদর উপজেলার সুবিদপুর,নন্দিপাড়া,কাগাপাশাসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের ভাসমান সবজির আবাদ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভূমিহীন মানুষেরা এতে বেশ সুফল পাচ্ছেন। সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া গ্রামের জয়নাল মিয়া বলেন, এভাবে পানির ওপর কচুরিপানার বেডে শাকসবজির চাষ করা সম্ভব আগে কখনো চিন্তাই করেননি। কৃষি কর্মকর্তারা এ ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়েছেন। এখন শাকসবজি বিক্রি করে তারা অর্থ উপার্জন করছেন।
৫নং কাগাপাশা ইউনিয়নের সবুজ মিয়া ও হাকিম বাদশা বলেন, আমরা এরই মধ্যে ১০ হাজার টাকার লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, গিমা কলমি, ঢেড়স, শিম ও লাউ বিক্রি করেছি। নতুন আরও সবজি হচ্ছে। তারা আরো বলেন, ভাসমান সবজি চাষের প্রতি আমাদের কোনো ধারণা ছিল না, কিন্তু এ বছর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নতুন এক অভিজ্ঞতা হলো। আমার পাঁচটি বেড তৈরি করতে চার-পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি এরই মধ্যে ১০-১১ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। এ
খনো অনেক সবজি বেডে রয়েছে। চাষী মুরাদ আহমেদ বলেন, প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় সরকারি খরচে ভাসমান সবজি চাষ করি। এ ধরনের চাষ লাভজনক। তাই আমি এবার নিজে চারটা বেডে সবজি চাষ করেছি। খুব ভালো সবজি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, যেসব এলাকা বছরের বেশির ভাগ সময় পানির নিচে থাকে, সেসব এলাকায় ভাসমান সবজি চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। তবে এ ধরনের উদ্যোগ কৃষকদের মাঝে আগে ছিল না, এই প্রদর্শনী প্রকল্প দেখে এখন অনেক কৃষক উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, কমপক্ষে পাঁচটি বেড থাকলে প্রত্যেক কৃষককে তাঁদের পক্ষে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলায় অনেক দিন যাবত এ ধরনের প্রদর্শনী প্রকল্প চলছে। ইতিমধ্যে কৃষকদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহের সৃষ্টি হচ্ছে এই ভাসমান বেডে সবচি চাষে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply