বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন হাটবাজারে ফ্যাশনের কাপড়ের দোকানগুলোতে ঢাকার গুলিস্তান-বঙ্গবাজার থেকে শুরু করে আশেপাশের কাপড়ের মার্কেট থেকে কাপড় কিনে এনে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের ট্যাগ লাগিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ফ্যাশনের দোকানগুলো থেকে পরিধেয় কাপড় কিনে প্রতারিত হয়েছেন এমন কয়েকজন ক্রেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দোকানের নাম ব্যবহার করে প্রতারণার বিষয়টি তোলে ধরেছেন।
গত শুক্রবার (২১জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেখ সবুজ নামে এক ব্যক্তি তার আইডিতে প্রতারণার বিষয়টি তোলে ধরেন। তিনি লিখেন, বড় বাজার যে কয়টা ব্রান্ডের কাপড়ের দোকান হইছে এগুলা কি সত্যি সত্যি ব্রান্ডের কাপড় দেয়? দামের বেলায় অনেক অনেক বেশি, মানের বেলায় ভালো না। ১৭০০ টাকার গেঞ্জি ১৭ দিনও পড়তে পারিনি। কুচ কুচ হয়ে যায় লোম উঠে,আবার ১৮০০ টাকার শার্ট কিনে সেইম অবস্থা,ব্র্যান্ডের কাপড় বলে ঠকাচ্ছে আমাদের!
শেখ সবুজ এই পোস্ট করার পর অনেকেই বিভিন্ন দোকানের প্রতারণা নিয়ে তাদের নিজনিজ মতামত তোলে ধরেন। শাহরিয়ার আহমেদ শাওন লিখেন, আমি ২ টা প্যান্ট কিনেছিলাম ৪ হাজার ৫৫০ টাকা রাখছে। তারা বলে এইটা কম্পিউটারে রেইট দেয়া। তাদের কিছু করার নাই। আসলে কি তারা ব্র্যান্ডের মাল আনে না ফুটপাতের মাল এনে ব্র্যান্ডের মাল হিসেবে চালিয়ে দেয় তাদের কথা বুঝা অনেক কঠিন। তবে তিনি কোন দোকান থেকে এই প্যান্ট কিনেছিলেন সেটা উল্লেখ করেননি।
মাকসুদ আকীব খান লিখেন-ঢাকা শহরের কেরানীগঞ্জ, মিরপুর, নিউমার্কেট, সদরঘাট ,চন্দ্রীমা মার্কেটের আশেপাশে থেকে কাপড় কিনে নিজেরা ব্র্যান্ডের ট্যাগ লাগিয়ে সেল দেয়! আর বলে ব্র্যান্ডের শার্ট, প্যান্ট। লন্ডন প্রবাসী নিশাত রহমান লিখেছেন-বানিয়াচং বড়বাজারে কিছু কথিত ব্র্যান্ডের দোকানে বঙ্গবাজার থেকে কাপড় কিনে এনে ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে ইচ্ছে মতো দাম ফালায়, আবার দোকানে ডেকোরেশন দেখে অনেকে ব্র্যান্ড মনে করে অরিজিনাল ব্র্যান্ডের কাপড়ের চেয়েও বেশি দাম রাখে। এই লেখাটা তিনি তার নিজের আইডিতেও আপলোড করেছেন।
এস এম জিল্লুর নামে আরেকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে তার আইডিতে তিনি লিখেছেন-বানিয়াচং বড়বাজারে কিছু দোকান আছে যারা নিজেদের ব্র্যান্ড বলে দাবি করে, কিন্তু আসলে তারা ঢাকার গুলিস্তান থেকে কাপড় কিনে এনে তাতে নিজেদের ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে দেয়। এরপর এসব কাপড় তারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে। এই দোকানগুলোকে এমনভাবে সাজানো হয় যে, ক্রেতারা মনে করেন তারা আসল ব্র্যান্ডের দোকানে এসেছেন এবং আসল পণ্য কিনছেন। দোকানের চমৎকার ডেকোরেশন এবং আকর্ষণীয় প্রদর্শনীর কারণে ক্রেতারা সহজেই প্রতারিত হন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি দোকান হলো ‘বেবি এন্ড মি’।
এই দোকানটি বিশেষ করে শিশু এবং বড়দেরও পোশাক বিক্রি করে এবং নিজেদের ব্র্যান্ড হিসেবে প্রচার করে। তবে বাস্তবে তারা ঢাকা থেকে অনেক নিম্নমানের পোশাক কিনে এনে নিজেদের লেবেল লাগিয়ে বিক্রি করে। ক্রেতারা দোকানের নাম এবং সাজসজ্জা দেখে আসল ব্র্যান্ড মনে করেন এবং উচ্চমূল্যে এসব পোশাক কিনে নেন যা আসল ব্র্যান্ডের পোশাকের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়।
সজিব আহমেদ জয় লিখেছেন,এক্স-মার্ট থেকে আমি প্রায়ই কিনি কাপড়ও মোটামুটি ভালোই দাম কখনোই ট্যাগ অনুযায়ী রাখেন নাই ট্যাগ প্রাইস থেকে ১৫০-২৫০ টাকা পর্যন্ত কম রাখছে। আর বেবি এন্ড মি এর কথা বলে লাভ নাই দামও অনেক কাপড়ের কোয়ালিটিও ভালো না।
আফসার টি আহমেদ লিখেন-বেবি এন্ড মি থেকে খুব একটা কেনাকাটা হয়নি। দুইবার দুইটা প্যান্ট নিয়েছি খুব যে ভালো হয়েছে বলবো না। আবার এক্সমার্ট নিয়ে কি বলবো তারা তো বাংলাদেশের একমাত্র ব্র্যান্ড। এদের কাপড় থেকে হকারের কাছে ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়।
এই বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: সাইফুল ইসলাম জানান,বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে কোনো অনিয়ম পেলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিস্তারিত জানতে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক দেবানন্দ সিনহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply