গরুর খাবারের দাম ও লালন-পালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর দাম গত বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। এতে যেমন ক্রেতারা কাঙ্খিত দামে পশু মেলাতে পারছেন না, আবার বিক্রেতারাও দাম না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বুধবার বিকেলে (১২ জুন) বানিয়াচংয়ের একমাত্র পশুর হাট ৫/৬নং বাজারের হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানিয়েছেন এ কথা।
বিক্রেতারা জানান, ঠিক গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ওই হাটে গত বছর ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরুর (৩ থেকে ৫ মণ) মণপ্রতি দাম ছিল ২৮ থেকে ২৯ হাজার টাকা এবং বড় গরু (৫ মণের ওপরে) মণপ্রতি ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরু মণপ্রতি ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় গরু বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকায়। যদিও অধিকাংশ ব্যাপারী প্রথমে দাম হাঁকছেন আরো বেশি। আবার সাইজ আকারেও বিক্রি কিছুটা হচ্ছে।
ব্যাপারীরা আরো জানিয়েছেন, দামের কারণে এ বছর ছোট গরুর চাহিদা বেশি। এখন যারা হাটে আসছেন, তারা ছোট গরু কিনছেন। এক থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে গরুর চাহিদা বেশি। ছোটগুলোর মধ্যে আবার দেশি জাতের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর বড় গরুর ক্রেতা তুলনামূলক কম। বানিয়াচং ৫/৬ বাজারের হাট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে বিক্রেতারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। দাম বেশি হলেও গরুর সরবরাহে কোনো কমতি নেই। সেই তুলনায় ক্রেতা অনেক কম।
তবে কাল পরশু বাজার জমবে বলে আশা করা হচ্ছে। গরুর হাট ঘুরে দেখা দেখা গেছে, বিপুল পরিমাণ কোরবানির গরু হাটে উঠেছে। বড় সাইজের গরু যেমন আছে তেমনি ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুতে ভরপুর হাট। যদিও ক্রেতাদের আকর্ষণ ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু।
পশুর হাটে কোরবানি গরু কিনতে আসা জহিরুল ইসলাম দৈনিক আমার হবিগঞ্জে বলেন এই হাটে গরুর সরবারহ বেশি কিন্তু গরু ব্যাপারীরা গরুর দাম চাচ্ছে বেশি। এখন পছন্দ অনুযায়ী গরু কিনতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।
বানিয়াচং ৫/৬নং বাজারের হাট ইজারাদার জানান, আগামী শুক্রবার থেকে বেচাকেনা শুরু হলেও মূল বেচাকেনা শুরু হবে পরের দিন শনিবার থেকে। বানিয়াচংয়ের খামারি জামাল মিয়া বলেন, গত বছর ১৬টি গরু বিক্রি হলেও আশানুরূপ দাম পাইনি। এ বছর সেই তুলনায় খরচ অনেক বেড়েছে। দাম বাড়িয়ে চাইলে ক্রেতাদের খুব একটা সাড়া মিলছে না । বড়গুলোর ক্রেতা নেই। কিন্তু আমার বেশিরভাগ গরুই মোটামুটি সাইজ ভালো। শেষ পর্যন্ত দাম কমে বিক্রি করতে হলে লোকসানে পড়তে হবে।
বানিয়াচংয়ের হাটে গরুর আমদানি বেশি থাকলেও এখনো ক্রেতার খুব একটা ভিড় নেই। গরুর দাম বেশি হওয়ায় কাঙ্খিত ব্যবসা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অধিকাংশরা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে খুব বেশি ক্রেতা দেখা মেলেনি। যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই দর্শনার্থী।
আনিসুজ্জামান নামের একজন ক্রেতা বলেন, গত বছরের থেকে প্রতিটি ছোট গরু প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি চাচ্ছে। এ দামে গরু কেনা প্রায় অসম্ভব। বাজারের ভাব বোঝা যাচ্ছে না। প্রচুর গরু, ক্রেতা নেই। তারপরও কেউ দাম ছাড়তে চাচ্ছে না।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply