সদ্য সমাপ্ত হওয়া বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ করিয়েও তাদের ভাতা না দেয়া ও ডিউটি না করানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন এর বিরুদ্ধে। অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও অপ্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে অনভিজ্ঞ লোকদের টাকার বিনিময়ে ডিউটি করিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।
এমনকি সরকারি শিক্ষকদের বাদ দিয়ে কেজি স্কুল থেকে শিক্ষক নিয়ে ডিউটি করানো হয়েছে। অন্য উপজেলায় যারা ট্রেনিং ই করেনি তাদেরকে এনে ডিউটি করোনো হয়েছে। উপজেলার প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষকদের সাথে আলাপকালে এমনটাই জানা গেছে। এমনকি নির্বাচন কর্মকর্তা ওই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ খাতায় স্বাক্ষর নেয়াসহ পরবর্তীতে তাদেরকে ভাতা তো দুরের কথা নির্বাচনের ডিউটিতে ই রাখেননি তিনি।
তবে অভিযোগগুলো সত্য নয় বলে সবকিছুই এড়িয়ে গেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সদ্য সমাপ্ত হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপÍ সহকারি রিটানির্ং কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন। জানা যায়, বিগত উপজেলা নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ,সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং কর্মকর্তাদের নিয়ে এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ বানিয়াচং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী নির্বাচনী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন বগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইবা আক্তার। তিনি জানান, আমাকে সারাদিন প্রশিক্ষণ করিয়ে ভাতা তো দুরের কথা ডিউটি পর্যন্ত করানো হয়নি। আমাকে জানানো হয়েছে লাগবে না বলে। তবে শুনেছি তারা অন্য উপজেলা থেকে শিক্ষক এনে উিউটি করিয়েছেন।
প্রশিক্ষণ নেয়া আরেক শিক্ষার্থী বানিয়াচং তারাসই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মুক্তা রানী সরকারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে ডিউটি করাবে বলে তারা আমাকে প্রশিক্ষণ করিয়েছে (আমার সিরিয়াল নাম্বার ৫৬) কিন্তু তারা ডিউটি করায়নি ভাতাও দেয়নি। তাদের উচিত ছিল আমার সাথে যোগাযোগ করার। পরবর্তীতে আমিও আর যোগাযোগ করিনি।
বানিয়াচং ইকরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লাভলি আক্তার জানান,আমি শিক্ষকতা পেশায় পুরাতন। ২২ বছর চলে আমার চাকরি জীবন। তারা কি কারণে আমাকে ট্রেনিং করিয়েও নির্বাচনী ডিউটি থেকে বাদ দিয়ে দিল সেটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিনা। তিনি আরো জানান,আমার ট্রেনিং ভাতা আনার জন্য অফিসে আমার ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম। অফিস থেকে তারা জানালো নির্বাচনের ডিউটি করার পর একসাথে ভাতা ও দিয়ে দিবে। কিন্তু আজ পর্যন্তও তারা আমার ভাতা দেয়নি। আমার বিদ্যালয়ের বিমল চন্দ্র,জেসমিন বেগমের ও একই অবস্থা। তারা ট্রেনিং করেছেন ঠিকই ভাতা পান নাই পরবর্তীতে তাদেরকে নির্বাচনী ডিউটিতেও রাখা হয়নি।
বানিয়াচং উপজেলার নির্বাচন অফিসার সৈয়দ কামাল হোসেন এর সাথে বিস্তারিত কথা হলে তিনি জানান,যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে আমরা ভাতা প্রদান করেছি। যারা এখনো ভাতা পায়নি তারা অফিসে এসে যোগাযোগ করলে তাদেরকেও দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষণ করানো হয়েছে পরিমানে বেশি।
এখান থেকে যাচাই-বাছাই করে নির্বাচনী ডিউটির জন্য নেয়া হয়েছে। আর টাকা বিনিময়ে অন্য উপজেলা থেকে শিক্ষক এনে বা অনভিজ্ঞদেও দিয়ে ডিউটি করানো হয়েছে সেটা একদম মিথ্যা। রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে থেকে এসবের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়। এখানে আমার কোন কিছু করার নাই।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply