বানিয়াচং উপজেলা সদরের প্রায় ১২টি রাস্তা দীর্ঘদিনেও সংস্কার কাজ না হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এইসব রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও সাধারণ মানুষদের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন বারবার সংস্কারের দাবি তোলা হলেও এ পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি কেউ। যদিও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন দ্রুত এসব রাস্তাগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,বানিয়াচং-হবিগঞ্জ রোডের ছিলাপাঞ্জা থেকে ৩নং ইউপি অফিসের সামন পর্যন্ত রাস্তাটির অনেক জায়গায় অসংখ্য ভাঙাচোরা রয়েছে। এই রাস্তাটি আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মিশেছে। রাস্তার অনেক জায়গায় ভেঙে পাথর উঠে গিয়ে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে যেয়ে প্রায়ই দুঘর্টনার শিকার হচ্ছেন যানবাহনের যাত্রীরা। স্থানীয় মঞ্জু রানী দাস জানান, এই রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষেরও নাভিশ্বাস ওঠে যায়।
বানিয়াচং সদরের বড়বাজার থেকে ৫/৬নং বাজারের রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। খানাখন্দ আর স্থানে স্থানে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যাতায়াতে শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই রাস্তার কারণে।
দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় এ রাস্তাটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। উপজেলা সদর বড়বাজার থেকে ৫/৬ নং বাজার রাস্তার শেষ সীমানা পর্যন্ত বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে। পুরো রাস্তার স্থানে স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। পাকা অংশের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। রাস্তাটিতে খানাখন্দ, গর্ত, ভাঙ্গন এতো বেশি যে যান চলাচলে চালকদের লাগামহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয়দের অভিমত, এখনই জরুরি ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে কিছু দিন পরে রাস্তাটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে বাজারের ব্যবসায়ী মোতালিব বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করি। রাস্তায় খানাখন্দের কারণে এদিকে যানবাহন আসতে চায়না ফলে যাতায়াতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
অটো রিকশা চালক মোজাহিদ জানান, শুধুমাত্র বড়বাজার ৫/৬ বাজার রাস্তাটি সংস্কার হলে আমরা গাড়ি চালিয়ে পরিবার নিয়ে কোন রকম খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম। বড়বাজার থেকে বাবুর বাজার পর্যন্ত রাস্তায় অসংখ্য ভাঙাচোরা রয়েছে। ফলে এই রাস্তায় যানবাহন দিয়ে চলাচল করাটা প্রায় মুশকিল হয়ে পড়েছে।
বড়বাজারের পশ্চিম দিকে থেকে সৈদ্যরটুলার সামন দিয়ে আদর্শ বাজার যাওয়ার রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত এই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে ৪নং ইউনিয়নের অন্তর্গত লামাপাড়ার ভিতর থেকে যাত্রাপাশা দাগুশেখ মাঠের রাস্তাটি ভেঙ্গে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। নতুন বাজার থেকে শিবপাশা যাওয়ার মেইন রাস্তাটি কুন্ডুরপাড় পর্যন্ত নানা জায়গায় ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপুর্ণ এই রাস্তাটি বেহাল থাকায় নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের।
মীরের হাটির সামন থেকে রায়েরপাড়া হয়ে প্রথমরেখ রাস্তাটি সংস্কার কাজ শুরু হলেও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীদের। মিয়াখানী থেকে প্রথমরেখ হয়ে বৈঠাখালি শরীফ উদ্দিন সড়ক পর্যন্ত রাস্তাটি একেবারেই ভাঙাচোরা। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দুরের কথা হেটে যাওয়া ই মুশকিল হয়ে পড়েছে। টমটম চালক জাবির মিয়া জানান, রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় এই রাস্তা দিয়ে ভাই গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বাররা যে কি করে বুঝি না।
নতুনবাজার থেকে পাঁড়াগাও হয়ে বানিয়াচং-হবিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক পর্যন্ত রাস্তার অনেক জায়গায় গর্ত হয়ে পরে রয়েছে। রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে বেহাল হওয়ায় বড় কোন যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে ঢুকতে পারেনি।
এছাড়া শেখের মহল্লার ভেতর থেকে শরীফ উদ্দিন রোড,শরীফখানী থেকে শরীফ উদ্দিন রোড ও নতুন বাজার থেকে মহিলা কলেজের সামন পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এসব রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও সাধারণ মানুষ।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে উপজেলা প্রকৌশলী মিনারুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এলজিইডি’র কিছু কিছু রাস্তা রিপিয়ারিং কাজ হয়েছে। কিছু চলমান আছে আর বাকীগুলোও পর্যায়ক্রমে হবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply