বানিয়াচংয়ে থেমে নেই পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং। রমজানে মাসে যেন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। তারাবীর নামাজের সময়, সেহরী ও ইফতারের সময় প্রতিনিয়ত চলছে লোডশেডিং। টেকিনিক্যাল সমস্যা, ওভারলোড ও লো-ভোল্টেজ ছাড়াও রয়েছে ঘনঘন ট্রিপ ও সোর্স লাইন রক্ষণা-বেক্ষণের কাজ।
শুধু তাই নয়, আকাশে মেঘ জমতে দেখলেই বা বিদ্যুতের তাঁরে বৃষ্টির ফোটা পড়লেই বিদ্যুত চলে যায়। আবার বিদ্যুত থাক বা না থাক মাস শেষে মোটা অংকের বিল ধরিতে দিতে ভুল করেনা কর্তৃপক্ষ। অফিসের দেয়া অভিযোগ নাম্বারও সবসময় ব্যস্ত থাকে। ফোনে বা সরাসরি অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। বিদ্যুত বিভাগের এই উদাসীনতার কারণে উপজেলাবাসীকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
শায়েস্তাাগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন বানিয়াচং উপজেলাতে প্রায় ৭২ হাজারেও বেশি গ্রাহক পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে পড়েছেন মহা বিপাকে। প্র্রতিদিন বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন রুটিনে পরিণত হয়েছে। তারাবী, সেহরী ও ইফতারের সময় ছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায়, দুপুরে এবং গভীর বা ভোর রাতে চলছে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। এমনও হয় ভোর রাতে বিদ্যুত চলে যায় এবং পরবর্তীতে সকালের দিকে বা তার পরও বিদ্যুতের দেখা মিলে।
বিদ্যুতের এই অবস্থায় বানিয়াচংয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে মান্দাভাব নেমেছে। ঈদকে সামনে রেখে হাটবাজারের ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো তাদের বেচাকেনা করতে পারছেন না। অফিসের দেয়া অভিযোগ নাম্বারে অভিযোগ জানালেও কোনো ফল পাওয়া যায়না। সবসময় ই ব্যস্ত থাকে এই নাম্বার। বানিয়াচংয়ের দক্ষিন যাত্রাপাশা রহিম মিয়া বলেন, একে তো গরম তার উপর রমজান মাস, তার উপর পল্লী বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিং। আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
বিদ্যুত অফিসে ফোন দিলেই সেই পুরনো ৩৩ কেভি লাইনের দোহাই দেয়া হয়। তারা বলেন শাহজীবাজারে সমস্যা। মসজিদে আজান দেয়ার সময় আজানের মধ্যেই চলে যায় বিদ্যুত। এনিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মারাত্নক বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে বাসা-বাড়ির ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার, ব্যবসায়ীদের ফটোস্ট্যাট মেশিনসহ বিভিন্ন দামি দামি জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুত না থাকার ফলে পুরো উপজেলাজুড়ে ইন্টারনেটের সেবাও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রচন্ড গরম তার সাথে বিদ্যুত না থাকার কারণে অস্থিরভাবে দিন পার করছেন তারা। ফলে ফ্যান, এলইডি টিভি, কম্পিউটার কাজই করছে না। তবে বিদ্যুত ঠিকমতো পাওয়া গেলেও বিদ্যুতের বিল কিন্তু কমছে না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। তারপরও রয়েছে ৩৩ কেভি লাইনের মেরামত করার অজুহাতে প্রতি সপ্তাহে বিদ্যুত বন্ধের মাইকিং। উপজেলার সর্বত্রই অব্যাহত লোডশেডিং শিকার হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
বানিয়াচং বড়বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সজিব মিয়া বলেন, সারা দিন বিদ্যুত থাকে না কিন্তু মাস শেষে এত বিল কিভাবে আসে আমরা বুঝি না। আমারা গ্রামের মানুষ । নতুন বাজারের মুদি মালের ব্যবসায়ী জাফর আলী জানান, বিদ্যুত না থাকার কারণে ঠিকমতো ব্যবসাপতি করা যাচ্ছেনা। সামনের ঈদ তারপর এই ভোগান্তি সহ্যের সীমা পার হয়ে যাচ্ছে। এদিকে এই লোডশেডিংয়ের ফলে অফিসপাড়ার কর্মকর্তা কর্মচারীদেও দৈনন্দিন জরুরী কর্মকান্ড করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। পাশাপাশি বানিয়াচংয়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সংবাদ প্রেরণে দারুনভাবে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান, উপজেলাজুড়ে আমাদের বিদ্যুত পাওয়ার কথা ১৮ মেগাওয়াট। কিন্তু আমাদেরকে দেয়া হচ্ছে ৫/৬ মেগাওয়াট। এটা সারাদেশের সমস্যা। সবক্ষেত্রেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। তারপর সামনে ঈদ থাকার কারণে বিভিন্ন শপিংমলে অতিরিক্ত বিদ্যুত ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ীরা। যার ফলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply