ক্যাচ মিসের মহড়ায় ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরে প্রথম রাউন্ডেই বাদ পড়ার সঙ্কায় অজিরা। ডি’ককের শতকে টানা দ্বিতীয় জয় সাউথ আফ্রিকার।
বৃহস্পতিবার (১২ই অক্টোবর) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশাল জয়ে সেমিফাইনালের পথে আরও এগিয়ে গেলো সাউথ আফ্রিকা! ডি’কক পেলো ওডিআইতে ঊনিশতম শতক।
শুরুতে টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে সাবধানী শুরু করলেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসে বড় শর্ট খেলে আফ্রিকার দুই ওপেনার। অধিনায়ক বাভুমা কিছুটা ধীরগতির হলেও ডি’কক ছিলো নিজের মতো সাবলীল।
দলীয় ১০৮ রানে ম্যাক্সওয়েলের বলে ওয়ার্নারের ক্যাচ হয়ে ব্যক্তিগত ৩৫ রানে ফেরে বাভুমা। তবে অন্যপ্রান্ত থেকে ব্যাটিং তান্ডব অব্যাহত রাখে ডি’কক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকে ভেন ডার ডুসেন।দলীয় ১৫৮ রানে ব্যক্তিগত ২৬ রান করে ডুসেন ফেরে জাম্পার বলে।
ডি’কক নিজের মতো করে খেলে মাত্র ৯০ বলে নিজের ১৯ তম শতক করেন।অজিদের বিপক্ষে এটি তার তৃতীয় সর্বোচ্চ।যদিও সাবেক অধিনায়ক ডু প্লেসিস ৫টি শতক নিয়ে সকলের উপরেই রয়েছে।
এবারের বিশ্বকাপে দশম ম্যাচে এসে এটি ১২তম শতক।বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকান খেলোয়াড় হিসেবে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২টি শতকের মালিক এখন ডি’কক।এক্ষেত্রে ডি’ভিলিয়ার্স ৪টি শতক নিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে।
দলীয় ১৯৭ রানে ১০৬ বলে ১০৯ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে মেক্সির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরে এই উইকেট কিপার ব্যাটার। সাবেক অধিনায়ক তরুণ মারমুখী ব্যাটার মাকারাম আগের ম্যাচেই ৪৯ বলে শতক করে বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়েছে।
আজও কামিন্সের স্লোয়ারে আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের অসাধারণ ইনিংস। মাকারামের পাশাপাশি মিলার,ক্লাসেন ও ইয়ানসেনের ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের উপর ভর করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় সাউথ আফ্রিকা।
অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিং মান বাকিদের কাছে সবসময়ই ছিলো অনুকরণীয়। তাদের হার না মানা মানসিকতা অন্য সব দলের চেয়ে আলাদা। আর বিশ্বকাপে তো অজিরা একপ্রকার অজেয়_ই থাকে সবসময়!তাই তো উইন্ডিজ ছাড়া বাকিরা একটি করে এবং ভারত দুটি বিশ্বকাপ জিতলেও অজিরা জিতেছে পাঁচ পাঁচটি বিশ্বকাপ।
তবে সেই ইঞ্জিনের মতো শক্তিশালী কন্ফিডেন্সের কিছুই এবারের অজি বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড়দের মাঝে দেখা যাচ্ছে না। ভারতের বিপক্ষে মার্শের শিশুসুলভ সেই কোহলির ক্যাচ ছেড়ে ম্যাচ হারার পর আজ আফ্রিকার দলটির বিপক্ষে সাত সাতটি ক্যাচ ছেড়েছে অজিরা।
এমনকি এর মাঝে তিন/চারটি ক্যাচ ছিলো একেবারেই সহজ ক্যাচ। অজিদের ক্যাচ মিসের মহড়ার দিনে মেক্সওয়েল ও স্টার্ক ভালো বোলিং করেছে। মেক্সি ১০ ওভারে মাত্র ৩৪ রানে ২টি এবং স্টার্ক দশ ওভারে ৫১ রানে ২টি উইকেট লাভ করে।শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করে মাত্র ১রান দেয় স্টার্ক।
৩১২ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নেমে অজিদের কখনোই কনফিডেন্স মনে হয়নি! দলীয় ২৭ রানে ফেরেন দলীয় দুই ওপেনার। হেডের ইঞ্জুরিতে ওপেন করতে নামা মার্শ টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছে।
ইয়ানসেবের বলে বাভুমার ক্যাচে আউট হওয়র পূর্বে ১৫ বলে মাত্র ৭ রান করে আউট হয়ে ফেরে মার্শ ভাইদের ছোটজন।পরের ওভারেই এনগিদির বলে মাত্র ১৩ রান করে ডুসেনের ক্যাচ হয়ে ফেরে আগের দুই ম্যাচে রান করা ওয়ার্নার।
শুরুর দুই উইকেটের চাপ সামলিয়ে দলকে টানতে ব্যর্থ হয় অজিদের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় নাম স্টিভেন স্মিথ। দলীয় ৫০ রানে ব্যক্তিগত ১৯ রান করে রাবাদার বলে ফেরে স্মিথ। পরপর দুই বলে টানা চার মেরে পরের বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লুর শিকার হয়ে ফেরে সাবেক এই অধিনায়ক।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলে একপর্যায়ে ৭০ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অজিরা।সেখান থেকে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচায় লাবুশেন-স্টার্ক ৭ম উইকেট জুটি।
১৩৯ রানের মাথায় ইয়েনসেনের বলে ডি’ককের ক্যাচ হয়ে স্টার্ক ২৭ রান করে ফেরার পর আবারও পথ হারায় সাবেক পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
শেষ পর্যন্ত ১৭৭ রানে অলআউট হয়ে ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে হার মানে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করে লাবুশেন।এছাড়াও ২২ রান করে আউট হয় কামিন্স।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে রাবাদা ৩টি,ইয়ানসেন, মাহারাজ ও সামসি ২টি করে উইকেট পায়।১টি উইকেট পেলেও ৮ ওভারে মাত্র ১৮ রান দেয় এনগিদি।
অসাধারণ ঝড়ো শতকের জন্য ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয় কুইন্টন ডি’কক।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply