প্রায় ৪শ বছরের ঐতিহ্য বাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামীর আখড়া। এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রাম
হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গের ৪ নং দক্ষিন পশ্চিম ইউনিয়নের যাত্রা পাশা মহল্লায় অবস্থিত।
জানা যায়, বিথঙ্গল গ্রামে অবস্থিত শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা রাম কৃষ্ণ গোস্বামীর দীক্ষায় দীক্ষিত ছিলেন শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামী।
রামকৃষ্ণ গোস্বামীর মতে সংসার ধর্ম পালন করে বৈষ্ণব ধর্ম পালন করা যায় না। বৈষ্ণব হতে হলে চিরদিনের জন্য নিরামিষ ভূজি হতে হবে এবং সংসারের মায়া ত্যাগ করে আখড়ায় এসে অবস্থান করতে হবে। সংসার ধর্ম পালন, আমিষ ভোজন এবং বংশ বিস্তার নিয়ে গুরুর সাথে দ্বিমত চলে আসে শ্যামবাউল গোস্বামীর।
তিনি গুরুকে বলেন সংসার ধর্ম ত্যাগ করলে এবং মানুষের বংশ বিস্তার না হলে কোন একসময় এই পৃথিবী মানব শূণ্য হয়ে যাবে। অস্তিত্বহীন হয়ে যাবে মানব সভ্যতা, পরবর্তীতে গুরুর নির্দেশে সংসার ধর্ম পালন করতে এবং আমিষ ভোজন চালু করতে বানিয়াচঙ্গে এসে একটি আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামী।
এটি শ্যামবাউল গোস্বামীর আখড়া নামে পরিচিত। মানুষের সেবা করে শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামী হয়ে উঠেন ব্যাধি গ্রস্ত মানুষের ভরসাস্থল। পূর্ব থেকেই আখড়াটি নানা রকম প্রতিকূলতার মাঝে গড়ে উঠেছে।
বর্তমানে আখড়া প্রতিষ্ঠানে রয়েছে একটি প্রাচীন মন্দির,মন্দিরে সংক্ষিত রয়েছে শ্যামবাউল গোস্বামীর ব্যবহার্য্য পায়ের খড়ম,হাতের লাঠি,রূপা এবং পিতলের তৈরি মাথার মূকুট।
বাংলাদেশ, ভারত,, সহ বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্ট্রে শ্যামবাউল গোস্বামীর অসংখ্য ভক্ত বৃন্দ রয়েছে।
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এই প্রতিষ্ঠানে সকলকে সেবা প্রদান করা হয়। এখানে প্রতিদিন আসা যাওয়া করেন অসংখ্য ভক্ত বৃন্দ এবং দর্শনার্থী।
প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে আখড়া সংলগ্ন পুকুরে পূন্য স্নান ও আখড়ার মাঠে বারুনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আখড়ায় যাতায়ত করার একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ায় সারা বছর চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় দেশ বিদেশ থেকে ছুটে আসা অসংখ্য ভক্ত বৃন্দ সহ দর্শনার্থীগনকে।
আাখড়ার বর্তমান সেবায়েত রিতেষ কুমার বৈষ্ণব বলেন- আখড়ার অস্তিত্ব মুছে দিয়ে আখড়ার নিজস্ব সম্পত্তি অবৈধ ভাবে দখল করে নিতে একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে।
২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর এলাকার একদল দুষ্কৃতিকারী হত্যার উদ্ধশ্যে রাতের আঁধারে আখড়ার পূর্বর্তী সেবায়েত শ্রী শ্রী আশুডোষ মোহান্ত গোস্বামীর উপর সন্ত্রসী হামলা চালিয়েছিল, এতে তিনি গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন, তার পর থেকে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে ২০২০ সালে ব্রেইন ষ্ট্রোক হয়ে শয্যাশায়ী থেকে ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে অস্তিব সংকটে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আখড়ার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মান করে প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
এ ছাড়াও আখড়া প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করার একমাত্র রাস্তাটি মেরামতের অভাবে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। দীর্ঘ বছর যাবত কোন রকম মেরামত কাজ না হওয়ায়
রাস্তাটি বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে, সারা বছরই আখড়ায় আসা বক্ত বৃন্দসহ অসংখ্য দর্শনার্থীগনকে চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হয়।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply