নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্য তেল ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হওয়ার কোনো চিত্র চোখে পড়েনি বানিয়াচংয়ের হাটবাজারগুলোতে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো তদারকি বা অভিযান ।
গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বানিয়াচং উপজেলা সদরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন দামের নির্দেশনা ব্যবসায়ীরা পেলেও তা কেউই মানছে না। নতুনবাজার, বড়বাজার, ৫/৬নং বাজার ও আদর্শবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায় প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ডিম প্রতিটি ১৪/১৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০ টাকা কেজি, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও কেন বেশি দামে বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরাই পাইকারি বাজার থেকে ৪০/৪৫ টাকায় কিনে আনি। তার পর যাতায়াত খরচ আছে। কাজেই ৫০ টাকার কমে পোষায় না।
আলমগীর নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন বলেন, আলু ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সরকার নির্ধারিত নতুন দাম ৩৬-৩৭ টাকা কেজির কথা বললে তিনি বলেন, কাঁচামাল আসলে দাম নির্ধারণ করে ধরে রাখা যায় না। নতুন মাল এলে দাম কমবে। আমি তো বেশি দামে কিনেছি।
ডিম বিক্রি করছিলেন কামাল নামে এক বিক্রেতা। তিনি জানান, তাদের প্রতি ডজন ডিম ১৪৭ টাকার ওপরে কেনা পড়েছে। বিক্রি করতেছেন ১৫০ টাকা ডজন দরে।
বানিয়াচং নতুন বাজারে আসা ক্রেতা শাহজালাল মিয়া জানান, বাজারে এলে অস্বস্তি লাগে। সবকিছুর দাম অনেক বেশি। বিক্রেতারা সবকিছু সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে রেখেছে। কিন্তু বাজারে দেখলাম কোনো ধরনের পণ্যের সংকট নেই। সবকিছুতেই ভরপুর থাকে। তারপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তদারকি ও করা হয়না।
কথা হয় এনজিওকর্মী আলাউদ্দিন মাসুক এর সাথে। তিনি জানান,সরকার তো দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই দামে তো কেনা যাচ্ছেনা। এসব দেখার কি কেউ নেই। বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছি। কি করবো চলতে হবে তো।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির রহমান জানান, সবকিছুতেই একটা সিন্ডিকেট কাজ করে। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটটাও অনেক বড়ো মনে হয়। তা না হলে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কেন বিক্রি করবেনা ব্যবসায়ী। দ্রুত বাজার তদারকি করার দাবি জানান তিনি।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহাকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা বলেন, সরকার যেহেতু দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে আমরা সেটাই খেয়াল রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কিন্তু বসে নেই।
জেলার কোথাও না কোথাও অভিযান পরিচালনা করছি। ব্যবসায়ীদের সরকারের বেঁধে দেয়া দামেই আলু, ডিম অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতে হবে। বেশি দামে বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply